Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

বাংলাদেশে হাইব্রিড ভুট্টার উৎপাদন, উন্নয়ন ও সম্ভাবনা-বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতা

ড. মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম মতিন

ভুট্টা একটি উচ্চফলনশীল বর্ষজীবী দানা জাতীয় খাদ্যশস্য। এদেশে প্রধান খাদ্যশস্য ধান ও গমের পরে তৃতীয় ফসল হিসেবে এর চাষাবাদের সম্ভাবনা অনস্বীকার্য। ভুট্টার অধিক ফলন ও বহুমুখী ব্যবহারের কারণে লাভজনক ফসল হিসেবে দেশে চাষীদের মাঝে এর    জনপ্রিয়তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সাথে ভুট্টা চাষেরও স¤প্রসারণ হচ্ছে। হাইব্রিড ভুট্টার ফলন অনেক বেশি এবং চাষ করেও অধিক লাভবান হওয়া যায়। দেশে ভুট্টার চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে ভালমানের বীজের চাহিদাও বাড়ছে। হাইব্রিড ভুট্টার ফলন মুক্ত-পরাগায়িত ভুট্টার চেয়ে ২০-৩০% বেশি হওয়ায় এবং চাষ করে কৃষক অধিক লাভবান হওয়ায় এর চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ভুট্টা (তবধ সধুং খ., ২হ = ২০) গাছ একটি ঈ৪ জাতীয় উদ্ভিদ যারা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় অক্সালো  এসিটিক এডিস নামে ৪ কার্বন বিশিষ্ট যৌগ উৎপন্ন করে এবং এদের পাতায় বিশেষ ধরনের ক্লোরোফিলের গঠন বিদ্যমান থাকায়       ফটো-রেসপিরেসন ঈ৩ উদ্ভিদের (যেমন ধান, গম ইত্যাদি) চেয়ে কম।  ফলে ভুট্টা গাছ ঈ৩ গাছের তুলনায় অধিক ফলন দেয়। বেশিরভাগ তথ্যমতে, মেক্সিকো ভুট্টার উৎপত্তিস্থান। তবে কেউ কেউ দক্ষিণ আমেরিকা বা ওয়েষ্ট ইন্ডিজে ভুট্টার উৎপত্তি হয়েছে বলে অভিমত প্রকাশ করে থাকেন।
ভুট্টা পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে জন্মে। ইটা সমুদ্রসমতল থেকে ৩,৩০০ মি. উঁচুতে পর্যন্ত জন্মাতে পারে। ভুট্টা ২১-৩০০ সে. তাপমাত্রায় ভাল জন্মে। ৪৫০-৬০০ মিঃমিঃ বৃষ্টিপাত ভুট্টা চাষের জন্য উপযুক্ত। ভুট্টার বীজের অঙ্কুরোদগমের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা হল ১৮-২০০ সে.। বিভিন্ন প্রকার মাটিতে ভুট্টা জন্মায়। তবে সুনিষ্কাশিত, উত্তম বায়ু চলাচলকারী, দোঁআশ এবং পলি দোঁআশ মাটি যেখানে প্রচুর পরিমাণে জৈব পদার্থ এবং পুষ্টি উপাদান থাকে সেখানে ভুট্টা গাছ ভালো জন্মে।
ভুট্টা একটি পর-পরাগায়িত (পৎড়ংং-ঢ়ড়ষষরহধঃবফ) ফসল। একই গাছে পুরুষ ফুল ও স্ত্রী ফুল (সড়হড়বপরড়ঁং) রয়েছে। গাছের মাথায় মঞ্জুরীদÐে বিন্যস্ত থাকে পুরুষ ফুল (ঃধংংবষ) এবং গাছের মাঝামাঝি অবস্থান থেকে বের হওয়া মোচায় থাকে স্ত্রী ফুল। ভুট্টার ¯ত্রীস্তবক পরিপক্ক হওয়ার আগেই পুংস্তবক পরিপক্ক হয় অর্থাৎ ইহা চৎড়ঃধহফৎড়ঁং প্রকৃতির। প্রায় ৯৫% ডিম্বাণু পর-পরাগায়িতভাবে নিকশিত হয় (ভবৎঃরষরুধঃরড়হ) তবে ইহাতে ৫% স্ব-পরাগায়ন ঘটতে পারে। ফুল ফোটার আগেই টাসেল (ঞধংংবষ) স¤পূর্ণ বের হয়। ¯পাইকের মাঝ বরাবর থেকে ফুল ফোটা শুরু হয় এবং তারপর ¯পাইকের উপর ও নিচের ফুলগুলো ফোটে। সাধারণতঃ  ¯পাইকের কেন্দ্রের শাখাটিতে আগে ফুল ফোটে। পরবর্তীতে পার্শ¦ীয় শাখাতে ফুল ফোটে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পরাগদানী থেকে পরাগরেণু পড়তে (ংযবফফরহম) শুরু করে এবং তা কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত চলে। জোড়া ¯পাইকলেটের উপরের ফুলটি আগে উন্মুক্ত হয়। পরাগ প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সজীব থাকে। তবে খুব উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়াতে দ্রæত মারা যায়। একটি টাসেল ২-১৪ দিন পর্যন্ত পরাগ সরবরাহ করে থাকলেও  ৫-৮ দিন পর্যন্ত পরাগ ঝরে পড়ে (ংযবফফরহম) এবং তৃতীয় দিনে সবচেয়ে বেশি পরাগ ঝরে পড়ে। একটি টাসেল হতে প্রচুর পরিমাণে পরাগ উৎপন্ন হয়। স্বাভাবিক একটি গাছের একটি টাসেল প্রায় ২৫,০০০,০০০টি পরাগ উৎপন্ন করতে পারে। সুতরাং প্রত্যেক সিল্কের (ঝরষশ) জন্য ২০,০০০-৩০,০০০ রেণু বিদ্যমান।
পরাগের সজীবতা (ারধনরষরঃু) খরাতে (ফৎড়ঁমযঃ ংঃৎবংং) কম প্রভাবিত হয়, যদিও তাপমাত্রা ৩৮০ সে. এর বেশি হলে পরাগের অঙ্কুরোদগম (মবৎসরহধঃরড়হ) দ্রæত কমে যায়,       বেশিরভাগ পরাগরেণু উৎস থেকে ৫০-৭০ মিটার এর মধ্যেই পড়ে। যদি বাতাসের বেগ বেশি হয় তবে এই  দূরত্ব অবশ্যই বাড়বে। বাইরের পরাগায়নের থেকে রক্ষা করে জেনেটিক্যালি বিশুদ্ধ হাইব্রিড বীজ উৎপাদনের জন্য আইসোলেশন বা সঠিক দুরত্ব একান্ত প্রয়োজন। কবের (ঈড়ন) উপরের দিকের ¯পাইকলেটের পূর্বেই গোড়ার ¯পাইকলেটগুলোর সিল্ক লম্বা হতে থাকে। অনুকূল অবস্থায় সকল সিল্ক ৩-৫ দিনের মধ্যেই উম্মুক্ত (বসবৎমব) হয় এবং পরাগরেণু গ্রহণোপযোগী (ৎবপবঢ়ঃরাব) হয় এবং ১৪ দিন পর্যন্ত এটা পরাগ গ্রহণোপযোগী থাকে। পরাগায়নের পরই সিল্ক শুকিয়ে যায় কিন্তু পরাগায়ন না ঘটলে অস্বাভাবিক লম্বা ও স্ফিত হয়। পরাগরেণু আর্দ্র ও আঠালো গর্ভমুÐতে পড়ার পরপরই অঙ্কুরিত হতে থাকে। সাধারণতঃ ডিম্বকের নিষেক প্রক্রিয়া ১২-২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘটে থাকে।
ভুট্টা গাছকে পর পর কয়েক প্রজন্ম (এবহবৎধঃরড়হং)            স্ব-পরাগায়ন করে ইনব্রেড লাইন তৈরি করা হয়। এ ধরনের লাইন থেকে বাছাইকৃত লাইনের মধ্যে সংকরায়ন করে প্রথম প্রজন্মে  (ঋ১) যে বীজ পাওয়া যায় তাই হাইব্রিড বীজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।  হাইব্রিড কয়েক প্রকারের হতে পারে। যথা:
ক) সিঙ্গল ক্রস হাইব্রিড: জন্মসূত্রে ভিন্ন, এরকম দু’টি লাইনের মধ্যে সংকরায়ন করে এর বীজ উৎপাদন করা হয়।
খ) ট্রিপস ক্রস/থ্রি ওয়ে ক্রস হাইব্রিড: প্রথমে দুটি লাইনের মধ্যে সংকরায়ন করে সিঙ্গল ক্রসের বীজ সংগ্রহ করতে হয়। সংগৃহীত সিঙ্গল ক্রস বীজ এবং ভিন্ন আর একটি লাইনের বীজ পাশাপাশি বপন করে এদের মধ্যে পুনরায় সংকরায়ন করা হয় এবং উৎপাদিত বীজকে ট্রিপল ক্রস/থ্রি ওয়ে ক্রস হাইব্রিড বীজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
গ) ডাবল ক্রস হাইব্রিড:  এই বীজ উৎপাদনে মোট চারটি লাইনের প্রয়োজন হয়। প্রথমে দু’টি লাইনের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন প্লটে সংকরায়ন করে দু’টি সিঙ্গল ক্রসের বীজ উৎপাদন ও সংগ্রহ করতে হবে। পরবর্তীতে দু’টি সিংগল ক্রসের বীজ একই প্লটে পাশাপাশি বপন করে পুনরায় সংকরায়ন করতে হবে। এভাবে উৎপাদিত বীজকে ডবল ক্রস হাইব্রিড বীজ বলা হয়।
হাইব্রিড বীজ উৎপাদন মুক্ত-পরাগায়িত ভুট্টার বীজ উৎপাদন থেকে ভিন্ন। হাইব্রিড জাতের বীজ উৎপাদন ও এর প্যারেন্ট লাইন সংরক্ষণ কাজে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনশক্তির প্রয়োজন, যাতে করে গুণগত মানস¤পন্ন হাইব্রিড বীজ উৎপাদন করা যায়। সঠিকভাবে হাইব্রিড বীজ উৎপাদনের জন্য আইসোলেশন জরুরি। আইসোলেশন নি¤েœর তিনভাবে স¤পাদন করা যায়। ১) নিরাপদ দূরত্ব: হাইব্রিড বীজ উৎপাদন বণ্টন অন্যান্য ভুট্টা ক্ষেত থেকে নিরাপদ দূরত্বে স্থাপন করা। সবচেয়ে বেশি, কন্টামিনেশন হয় অন্যান্য ভুট্টা থেকে ৫০ থেকে ৭০ মি. এর মধ্যে। নিরাপদ দূরত্ব ৫০০ মিটার হওয়া উচিত। ২) উপযুক্ত সময়: নিরাপদ সময় ২৫ দিন থেকে ১ মাস। এই সময় বিভিন্ন জাতের উপর নির্ভর করে কিছুটা কমবেশি হতে পারে। ৩) ভালভাবে সিনক্রোনাইজেশন।
যে সকল জাতের ভুট্টার বীজ মুক্ত-পরাগায়নের মাধ্যমে বর্ধন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় তাকে মুক্ত-পরাগায়িত জাত বলে। এ সকল জাতের বীজ কৃষকেরা নিজেরাই রক্ষণাবেক্ষণ করতে ও বীজ হিসেবে রাখতে পারে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) উদ্ভাবিত এ ধরনের মুক্ত-পরাগয়িত জাতগুলো হল বর্ণালী, শুভ্রা, খৈ ভুট্টা, মোহর, বারি ভুট্টা-৫, বারি ভুট্টা-৬, বারি ভুট্টা-৭ ও বারি মিষ্টি ভুট্টা-১, বারি বেবি কর্ণ-১। এছাড়া বারি ১৬টি হাইব্রিড ভুট্টার জাত উদ্ভাবন করেছে। জাতগুলো হলো বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-২, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৩, বারি টপ ক্রস হাইব্রিড ভুট্টা-১, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫ (ছচগ), বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৬, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৭, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৯, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১০, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১১, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১২, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৩, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৪, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৫ ও বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৬। এগুলোর মধ্যে বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৫ (ছচগ), বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৭ ও বারি হাইব্রিড ভুট্টা-৯ কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া যুগিয়েছে। সাম্প্রতিককালে উদ্ভাবিত বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৪ সাদা দানা বিশিষ্ট ও খাটো প্রকৃতির। তাছাড়া বারি হাইব্রিড ভুট্টা ১৫ ও ১৬ বরেন্দ্র এলাকার উপযোগী, কম সেচে চাষাবাদ করা যায় এবং পরিপক্ক অবস্থায় গাছের পাতা সবুজ থাকে বিধায় পশু খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
ভুট্টার সাথে সাথী ফসল হিসেবে আলু, লালশাক, পালংশাক ও বরবটি চাষ করা যায়। এছাড়া আন্তঃফসল হিসেবে বাদাম, সয়াবিন, মুগ, ছোলা, মুলা, মিষ্টি আলু, মরিচ ইত্যাদির মতো লাভজনক ফসল চাষ করা যায়। উপরন্তু বিভিন্ন ফসল ধারায় ভুট্টা চাষের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। যেমন- ভুট্টা-রোপা আমন-আলু, ভুট্টা-মুগ-সরিষা, মুগ-(বৃষ্টি নির্ভর)-রোপা আমন-ভুট্টা, ভুট্টা-পতিত-গম ইত্যাদি।
বাংলাদেশে ভুট্টা ফসলে এখন পর্যন্ত মোট ২৮ ধরনের ছত্রাক, ভাইরাস ও নেমাটোডের আক্রমণ পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে এগুলো এখনো মারাত্মক আকার ধারণ করেনি। পোকার আক্রমণের মধ্যে কাটুইপোকা, স্টেম বোরার, কর্ণ এয়ারওয়ার্ম, রাইচ উইভিল, রাইচ মথ, এফিড এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। সম্প্রতি ফল আর্মিওয়ার্ম নামক পোকাটি দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে ভুট্টা ফসলে ব্যাপক ভাবে আক্রমণ করে। এটা দমনে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যৌথভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করে পোকাটির আক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (অচঅ) বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮-১৯ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের (২০১৮-১৯, ১৯-২০, ২০-২১, ২১-২২ ও ২২-২৩) মধ্যে প্রজনন বীজ ও হাইব্রিড বীজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে যথাক্রমে ২.১০, ২.৬০; ২.২০, ৩.৫০; ২.৩৮, ৪.২০; ২.৬০, ৪.৫০; ও ২.৬৩, ৫.০০ মে. টন। বর্তমানে বারি’র সাথে সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে ব্র্যাক, লালতীর, সুপ্রীম সীড, এসিআই ও কৃষিবিদ সীড বিভিন্ন সিমিট (ঈওগগণঞ) পরীক্ষণ সম্পাদন ও বীজ উৎপাদন করে যাচ্ছে।
তাছাড়া বাংলাদেশে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানী হাইব্রিড ভুট্টার বীজ আমদানির মাধ্যমে দেশের চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছে। বারি উদ্ভাবিত পিতৃমাতৃ সারি সমূহ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)-কে সরবরাহ করা হয় যেন তারা বীজ বর্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন এবং বাণিজ্যিকভাবে বীজ বিক্রয় করতে পারে।
জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৮ অনুযায়ী বিশেষ আঞ্চলিক কৃষির আওতায় উপকূলীয় কৃষি অঞ্চলের উপযোগী ফসল এবং লাভজনক হিসেবে ভুট্টার চাষকে সুপারিশ করা হয়েছে।      ফিজিওলজিক্যাল হোমিওস্ট্যাসিস বা বাফারিং ক্ষমতা তথা উচ্চ অভিযোজন ক্ষমতা সম্পন্ন হওয়ায় ভুট্টা ফসলটি লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা, খরা ইত্যাদি প্রতিকূল পরিবেশেও চাষ করা সম্ভব। তাছাড়া খরিফ-১ মৌসুমেও ভালভাবে চাষ করা যায়।
৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ২০১৬-২০২০ অনুযায়ী ভুট্টার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২০২১ সালে ১.৮৫ মিলিয়ন মে. টন ধরা হয়েছে যা ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে।  বর্তমান সরকারের ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে খাদ্য নিরাপত্তা আইনের নিশ্চয়তার জন্য প্রতিকূল কৃষি আবহাওয়া অঞ্চল যেমন লবণাক্ত অঞ্চল, হাওড়, চরাঞ্চল, পাবর্ত্য অঞ্চল ও বরেন্দ্র অঞ্চল সমূহের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও জীবিকায়নের উপর জোর দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাইব্রিডাইজেশন ও জিএম ফুড বিষয়ক গবেষণাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ভুট্টা একটি আদর্শ ফসল।
বিগত কয়েক বছরে ভুট্টার উৎপাদন (লাখ মে. টন), জমির পরিমাণ (লক্ষ হে.) এবং ফলন (মে. টন/হে) ছিল যথাক্রমে ২০১৩-১৪ (২৫.১৬, ৩.৬৪, ৬.৯১); ২০১৪-১৫ (২৩.৬১, ৩.৫৫. ৬.৬৫); ২০১৫-১৬ (২৭.৫৯, ৩.৯৫, ৬.৯৮); ২০১৬-১৭ (৩৫.৭৮,৪.৩৪,৮.২৫) এবং ২০১৭-১৮ (৩৮.৯৩, ৪.৪৭, ৮.৭১)। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভুট্টার বীজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১০০ মে. টন যা এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য ২০২৯-৩০ সালে ১০% বৃদ্ধি করে ১,০০০ মে. টন বীজ উৎপাদন করা প্রয়োজন।
জাতীয় কৃষি মেলা ২০১৮ এর তথ্যানুযায়ী, ২০০৯ সালে দেশে ভুট্টার উৎপাদন ছিল ৭.৩০ লাখ মে. টন এবং ২০১৮ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৮.৯৩ লাখ মে. টন হয়েছে। অর্থাৎ ১০ বছরে দেশে ভুট্টার উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৪৫.৭৯ ভাগ।  দিন দিন ভুট্টার উৎপাদন ও চাহিদা বৃদ্ধির কারণে সরকার ২০১৭ সালের ২২ নভেম্বর বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট নামে একটি নতুন গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার লক্ষে সংসদে একটি আইন পাশ করে।
 স্বাধীনতা পরবর্তী জাতির জনক উপলব্ধি করেন এদেশের     কৃষির উন্নয়ন তথা বাংলার মানুষের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যতা দূরিকরণের জন্য কৃষির উন্নয়নের বিকল্প নেই। এজন্য তিনি সবুজ বিপ্লবের ডাক দেন। ১৯৭৩ সালের ১৩ই ফেব্রæয়ারী বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে  কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দান করেন। পাশাপাশি কৃষির বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি, কৃষি ঋণের সুদ মওকুফ, কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।  তাঁর দূরদর্শিতার কারণে আজ দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ কৃষিতে এসেছে অভূতপূর্ব সাফল্য বিশেষত দানা শস্যে।
অধিক ফলন, উচ্চ অভিযোজন ক্ষমতা ও বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী হওয়ায় ভুট্টার উৎপাদন বৃদ্ধি ও জাত উন্নয়নে অধিক গুরুত্বারোপের মাধ্যমে দেশের প্রান্তিক কৃষককে আরও লাভবান করা সম্ভব।য়

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, মহাপরিচালকের দপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুর, ই-মেইল: quamrul_islam76@yahoo.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon